* সন্তান মায়ের স্তনবৃন্ত চুষে দুগ্ধপান করে। মিলনের পূর্বে স্ত্রীর স্তনবৃন্ত চোষণ করা কি স্বামীর জন্য বৈধ? পরন্ত অসাবধানতায় যদি পেটে দুধ চলে যায়, তাহলে কি স্ত্রী মায়ের মত হারাম হয়ে যাবে?
** স্বামীর জন্য বৈধ, তার স্ত্রীর স্তনবৃন্ত চোষণ করে উভয়ের যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি করা। সে ক্ষেত্রে যদি স্ত্রীর দুধ তার পেটে চলে যায়, তাহলে তাতে কোন প্রকার ক্ষতি হয় না এবং স্ত্রী তার মা হয়ে যায় না। কারণ দুধ পানের মাধ্যমে হারাম হওয়ার যে সব শর্ত আছে, তা হলঃ
১। দুই বছর বয়সের মধ্যে দুধ পান করতে হবে। সুতরাং তার পরে বড় অবস্থায় দুধ পান করলে হারাম হবে না।
২। পাঁচবার পান করতে হবে।
সুতরাং ২/৪ বার পান করলে কোন প্রভাব পড়ে না। আর বড় অবস্থায় ৫ বারের বেশী পান করলেও কোন ক্ষতি হয় না। (ইবনে বায, ইবনে উষাইমীন)
তবে জেনেবুঝে দুধপান না করাই উত্তম।
* শিঙ্গারের সময় স্তনবৃন্ত চুষতে গিয়ে স্ত্রীর দুধ যদি স্বামীর পেতে চলে যায়, তাহলে স্ত্রী কি হারাম হয়ে যাবে?
** রতিক্রীড়ার সময় স্ত্রীর দুধ যদি স্বামীর পেটে চলে যায়, তাহলে স্ত্রী স্বামীর মা হয়ে যাবে না। কারণ দুধ পান করিয়ে “মা” হওয়ার দুটি শর্ত আছেঃ
(এক) দুধ পান যেন বিভিন্ন সময়ে পাঁচবার হয়।
(দুই) দুধপান যেন দুধপানের বয়সের ভিতরে হয়। আর তা হল দুই বৎসর বয়সের ভিতরে। যেহেতু মহান আল্লাহ বলেছেন,
“আমি তো মানুষকে তার পিতা মাতার প্রতি সদাচারনের নির্দেশ দিয়েছি। জননী কষ্টের পর কষ্ট বরণ করে সন্তানকে গর্ভে ধারণ করে এবং তার স্তন্যপান ছাড়াতে দু বছর অতিবাহিত হয়।” (লুকমানঃ ১৪)
জননীগণ তাঁদের সন্তানদেরকে পূর্ণ দু বছর দুধ পান করাবে; যদি কেউ দুধ পান করার সময় পূর্ণ করতে চায়। (বাকারাহঃ ২৩৩)
সুতরাং দু'বছর বয়সের পরে দুধপান করলে মা প্রমাণিত হবে না। আর ‘মা’ প্রমাণিত না হলে স্ত্রী হারাম হবে না। (ইবনে উষাইমীন)
তবে জেনেবুঝে দুধপান না করাই উত্তম।
* সহবাসের সময় আমার স্বামী প্রবল উত্তেজনাবসতঃ এমন অনেক অশালীন কথা বলে, যে কথা অন্য সময় বলে না। অনেক সময় সে সব বলে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। তাতে কি তার পাপ হবে?
** স্বামী স্ত্রীর মাঝে যে যৌনতা করা হয়, সেটাই অন্যের সাথে করা অশালীনতা অসভ্যতা। সুতরাং আপসের সঙ্গম বৈধ হলে প্রবল উত্তেজনার পূর্বে তৃপ্তি গ্রহণ করতে ঐ শ্রেণীর কোন কথা বলা দূষণীয় নয়। তবে তা না বললে যদি চলে, তাহলে ত্যাগ করাই উত্তম। (মুহাম্মাদ স্বালেহ আল মুনাজ্জিদ)
* সন্তান প্রসবের পর কখন মিলন বৈধ হয়?
** সন্তান প্রসবের পর যখন রক্তস্রাব বন্ধ হয়ে যায়, তখন থেকেই মিলন বৈধ। স্রাব অব্যাহত থাকলে ৪০ দিন পর্যন্ত অবৈধ। ৪০ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলে স্রাব থাকলেও মিলন বৈধ।
* স্বামী যদি কুশ্রী হয়, তাহলে স্ত্রী স্বামী সহবাসের সময় কোন সুশ্রী যুবককে এবং স্ত্রী যদি কুশ্রী হয়, তাহলে স্বামী স্ত্রী সহবাসের সময় কোন সুশ্রী যুবতীকে কল্পনায় এনে তৃপ্তি নিতে পারে কি?
** এই শ্রেণীর কল্পিত পরপুরুষ বা পরস্ত্রির সহবাস এক প্রকার ব্যভিচার। সহবাসের সময় স্ত্রীর জন্য বৈধ নয় অন্য কোন সুন্দর অন্য সুস্বাস্থ্যবান পুরুষকে কল্পনা করা এবং স্বামীর জন্যও বৈধ নয় অন্য সুন্দরী সুস্বাস্থ্যবতী যুবতীকে কল্পনা করা। বৈধ নয়, পরপুরুষ বা পরস্ত্রীর নাম নিয়ে উভয়ের তৃপ্তি নেওয়া অথবা উত্তেজনা বৃদ্ধি করা। মনে মনে যাকে ভালবাসে, তার সাথে মিলন করছে খেয়াল করা।
উলামাগন বলেন, “ যদি কেউ এক গ্লাস পানি মুখে নিয়েও কল্পনা করে যে, সে মদ খাচ্ছে, তাহলে তা পান করা হারাম।” ৬৪৭ (মাদখাল ২/১৯৪, ফুরু ৩/৫১, ত্বারহুত তাষবীর ২/১৯)
* একাধিক স্ত্রীর মাঝে সমতা ইনসাফ বজায় রাখা ওয়াজেব। রাত্রিবাস সবার সাথে সমান ভাবে করলেও মিলন সকলের সাথে হয়ে ওঠে না। তাতে কি আমি গোনাহগার হব?
** একাধিক স্ত্রীর মাঝে ভালবাসাকে যেমন সমানভাবে ভাগ করে বণ্টন করা যায় না, তেমনি আকর্ষণ ও মিলনও সবার সাথে সমান হওয়া জরুরী নয়। তবে নিজের পক্ষ থেকে অনিচ্ছা প্রকাশ করা উচিৎ নয়। কোন স্ত্রী না চাইলে ভিন্ন কথা। কিন্তু চাইলে তার হক আদায় করা উচিৎ এবং সে ক্ষেত্রে সকলের মাঝে সমতা বজায় রাখা কর্তব্য।
* ইফতারের সময় হয়ে গেলে কিছু না খাওয়ার আগে কি স্বামী স্ত্রী মিলন করতে পারে?
** যদি স্বামী এতই ধৈর্যহারা হয়, তাহলে তা অবৈধ বলা যাবে না। যেহেতু সে সময় তাঁদের জন্য তা বৈধ। অবশ্য সুন্নত হল খেজুর পানি দিয়ে ইফতার করা। কিন্তু সেই সুন্নত পালনে কেউ যদি অধৈর্য হয়, তাহলে পেটের ক্ষুধা মিটাবার আগে যৌন ক্ষুধা মিটাবার দরজা উন্মুক্ত আছে। ইবনে উমার (রাঃ) কোন কোন দিন সহবাস দ্বারা ইফতার করতেন বলে বর্ণিত আছে। (ত্বারাবানী)
* রোযা রেখে মহিলা যদি মহিলা ডাক্তার না পেয়ে পুরুষ ডাক্তারের কাছে এমন রোগ দেখাতে যায়, যাতে ডাক্তার তার লজ্জাস্থানে হাত প্রবেশ করতে বাধ্য হয়। তাহলে তাতে তার রোযা নষ্ট হয়ে যাবে কি?
** ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য তা করলে তাতে তার রোযা ভাঙ্গবে না। বরং স্বামীও যদি খেলার ছলে নিজ আঙ্গুল প্রবেশ করায়, তবুও তার রোযা ভাঙ্গবে না। যেহেতু তার দলীল নেই। আর তা সহবাসও নয়।
* বৃহস্পতিবার স্বামী বাড়িতে ছিলেন না বলে নফল রোযা রেখেছিলাম। কিন্তু তিনি আসার পর অধৈর্য হয়ে আমার সাথে মিলনে লিপ্ত হয়ে যান। এতে কি কাফফারা দিতে হবে?
** নফল রোযা রাখার পর ইচ্ছা করে ভেঙ্গে ফেললে কোন ক্ষতি হয় না। তা কাযা করাও ওয়াজেব নয়। সুতরাং আপনার স্বামীর উক্ত আচরণে কাফফারা ওয়াজেব নয়।
* রমযানের কাযা রোযা রেখেছিলাম। কিন্তু একদিন আমার স্বামী অধৈর্য হয়ে আমার সাথে মিলনে লিপ্ত হয়ে যান। এতে কি কাফফারা দিতে হবে?
** ফরয রোযা কাযা করার সময় তা ভেঙ্গে ফেলা বৈধ নয়। সুতরাং আপনার স্বামীর উক্ত আচরণ সঠিক নয়। তার উচিৎ, আল্লাহ্র কাছে তওবা করা। অবশ্য কাফফারা ওয়াজেব নয়। কারণ, সে কাজ রমযানের বাইরে তাই।
#hadithbd
No comments:
Post a Comment