এইডস নিয়ে কিছু ভুল ধারণা

এইডস এ সময়ের মারাত্মক ব্যাধি। এইডস এমন একটি রোগ, যার কোনো চিকিৎসা নেই, নেই কোনো প্রতিকার। অযথা এইডসের নাম শুনে ভয়ে আঁতকে উঠে লাভ নেই।
বরং এইডস সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য নিজে জানতে হবে এবং অন্যকেও জানাতে হবে। তবেই এইডস প্রতিরোধ করা সম্ভব।
যেহেতু এইডস একটি ঘাতকব্যাধি, তাই এ নিয়ে সাধারণের মধ্যে শঙ্কার শেষ নেই। কিন্তু এইডস সম্পর্কে এই শঙ্কার অনেকটাই অমূলক। অনেকেই এইডসের নাম শুনে অযথাই ভীত হয়ে পড়েন। আসলে এইডসের প্রকৃত তথ্য অনুধারণ করতে পারলে ভীত হওয়ার কিছু নেই।
যেমন, কেউ কেউ আছেন এইডস রোগীকে দেখামাত্রই উল্টো দৌড়ে পালাবেন এ রকম একটা অবস্থা। ভাবটা এমন যেন এইডস রোগীকে যারা দেখবে, তারাও এ রোগে আক্রান্ত হবে। প্রকৃতপক্ষে ব্যাপারটি তা নয়।
- এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে স্বাভাবিক ও সামাজিক মেলামেশায় এ রোগ অন্যের মাঝে ছড়ায় না।
- এইডস রোগীর সঙ্গে করমর্দন, কোলাকুলি, একসঙ্গে বসা, গল্প করা, চলাফেরায় কোনো বাধা নেই। এ জাতীয় মেলামেশায় এ রোগ অন্যের মাঝে ছড়ায় না।
- এমনকি এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস, হাঁচি, কাশি বা থুতুর মাধ্যমেও এ রোগ অন্যকে সংক্রমিত করে না।
অনেকেই প্রশ্ন করেন, চুমুতে এ রোগ ছড়ায় কি-না? আসলে এইডস রোগীর সঙ্গে চুমুতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে কথা হচ্ছে কারো মুখে যদি ছোটখাটো ঘা থাকে কিংবা ছিঁড়ে গিয়ে থাকে অথবা মাড়ি থেকে সামান্যতম রক্তপাত হয়ে থাকে ইত্যাদি ক্ষেত্রে এইডসের জীবাণু সুস্থ ব্যক্তির রক্তে সংক্রমিত হতে পারে। আর এ কারণে
এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তিকে চুমু খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে একই বাসায় বসবাস করলে, একই বিছনায় ঘুমালে, একই পায়খানা ব্যবহার করলে, একই তোয়ালে- গামছা, বিছানার চাদর ব্যবহারে এইডস ছড়ায় না। কাজেই এইডস আক্রান্ত ব্যক্তিকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
অনেকেই ভাবেন, এইডস আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনো মশা কামড়ানোর পর সেই মশা যদি কোনো সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ায়, তাহলে কি সুস্থ ব্যক্তিও এইডসে আক্রান্ত হবে? এ প্রশ্নের উত্তরে বলতে হয়, কীটপতঙ্গ বা মশার কামড়ে এইডস ছড়ায় বলে জানা যায়নি। কাজেই এইডসকে অযথা ভয় না পেয়ে এইডস প্রতিরোধে সচেতন হতে হবে।

ডা. সজল আশফাক
সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

No comments:

Post a Comment