দাম্পত্য জীবনে সুখস্বর্গ উপ‌ভোগ করুন

সুখ আর শা‌ন্তি ! সুখ চায়না, আল্লাহর দু‌নিয়ায় এমন নারী ও পুরুষ পাওয়া অসম্ভব। সুখ, শা‌ন্তি এদুটো ব্যাপার সবচাই‌তে বেশি প্রভা‌বিত ক‌রে বি‌য়ের পর দাম্পত্য জীব‌নে। কারণ এখান থে‌কেই পরিবা‌রের উদ্ভব ঘ‌টে। সুখী দাম্পত্য জীবন সকলেই চায়। কিন্তু চাইলেই কি সব পাওয়া যায় ? প্রায়ই যায়না। ত‌বে স‌দিচ্ছা ও বি‌শেষ কিছু গু‌নের কার‌ণে দাম্পত্য জীবনে সুখ পাওয়া সম্ভব। সুখী দাম্পত্য জীবন পেতে হলে কতগুলি নিয়ম বা শর্ত মেনে চলতে হয়। এই শর্তগুলি মানলেই জীবন হয়ে ওঠে আনন্দঘন ও
মধুময়।

এক সংসারে থাকতে গেলে গরম তে‌লে পা‌নি পড়‌বেই। কিন্তু তাই বলে একসঙ্গে থাকব না, সংসার কর‌বো না, এসব বললে কীভাবে সংসার টিক‌বে ! দাম্পত্য জীবন‌কে সুখী, সুন্দর ও নির্মলরূ‌পে গ‌ড়ে ‌তোলার জন্য নি‌চের নিয়মগু‌লো মে‌নে চলুন আজ থে‌কেই; 

দাম্পত্য জীব‌নের অ‌পরিহার্য অঙ্গ হ‌চ্ছে স্বামী_স্ত্রীর শারী‌রিক মিলন। দাম্পত্য জীব‌নে য‌দি তৃ‌প্তিদায়ক যৌন মিল‌নের অভাব থা‌কে ত‌বে আর যাই করুন, সংসার টি‌কি‌য়ে রাখা খুবই কষ্টকর হ‌বে। তাই স্বামী বা স্ত্রী‌কে প‌রিপূর্ণ প্রশা‌ন্তিময় যৌন মিল‌নের দি‌কে অবশ্যই লক্ষ রাখ‌তে হ‌বে।

মাথা গরম তো সকলেরই হয়। কিন্তু তাই বলে এক গাল রাগ নিয়ে বিছানায় সঙ্গীর সা‌থে শুতে গেলে কখনই দাম্পত্য জীবন সুখী হ‌তে পাবে না। তাই বিছানায় যাওয়ার আগেই নিজের রাগকে ভু‌লে গি‌য়ে তবেই বিছানায় যান।

বিয়ের পর একে অপরকে ভা‌লোভা‌বে জানা ও চেনাটা খুবই জরুরি। মতানৈক্য হতেই পারে। দুজন আলাদা মানুষ, তাই আলাদা চিন্তা ভাবনা হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তার জেরে যদি বাড়িতে লংকাকান্ড বাধান তাহলে কিছুই করার নেই। তাই একে অপরের কথা শুনুন এবং পরে মাথা ঠান্ডা হলে অপরকে বুঝিয়ে বলুন, দেখবেন ঝামেলা মিটে গে‌ছে।

ভুল মানুষ মাত্রই হয়ে থাকে। তবে সেই ভুলটাকে ধরে বসে থাকবেন না। মাথা ঠান্ডা করে স্বামী অথবা স্ত্রীকে ভুলটা ধরিয়ে দিন। তারপর তাকে ক্ষমা করে দিন। ক্ষমা করার ওপরে কোন কথাই থাকতে পারে না। ক্ষমা করার পর এই ভুল নিয়ে আর কখনই কোনও কথা বলবেন না। ভুলের কথা সম্পূর্ণভাবে ভুলে যে‌তে হ‌বে।

চুপ করে থাকা একটা ইবাদতমূলক কাজ। অপ্র‌য়োজনীয় কথা না বা‌ড়ি‌য়ে, কথা বল‌লে ঝগড়া বাধবে এমন সময়গু‌লো‌তে মাঝে মধ্যে চুপ করে থাকলে কিছুই যায় আসে না। তাই একজন বেশি কথা বললে নিজে একটু চুপ করে থেকেই দেখুন না কি হয়!

নিজের বাবা-মা, ভাই বোনকে এতো দিন রাগ দেখিয়েছেন বলে, বউ বা স্বামীর ওপরেও রাগ দেখাবেন তা কখনই করা যা‌বে না। বেশিরভাগ সময়ই মুখে একটা প্লাস্টিকহাসি লাগিয়ে রাখুন দেখবেন দাম্পত্য জীবনে সু‌খের চাকা গড়গড়িয়ে ঘুরবে।

বিয়ের পরে বউয়ের বারণকে চোখ রাঙাবেন তা কখনই চলবে না।  তাঁর মতে কদিন চলেই দেখুন না। আস্তে আস্তে স্বভাব পরিবর্তন হয়ে যাবে আপনারও। ত‌বে সংসারের অ‌নিয়ম না ক‌রে, ‌সেদিকেও খেয়াল রাখা দরকার।

অফিসের কাজ কখনই বাড়িতে করবেন না। অফিসের যাবতীয় কাজকর্ম, চিন্তা ভাবনা; ফেলে আসবেন অফিসের মধ্যেই। বাড়িতে নিয়ে এসে নিজের কাছের মানুষদের ওপর ওসব চাপা‌লে দাম্পত্য জীবন টিঁকবে না।

বিয়ে করেই টিপিক্যাল স্বামী-স্ত্রীতে পরিণত হয়ে যাবেন না। দেখবেন দুজনের মধ্যে যেন বন্ধুত্বটি বর্তমান থাকে। বন্ধুত্ব থাকলেই আর কোনও অসুবিধা হবে না।

বিয়ে করেছেন ঘরে মাকে সাহায্য করার জন্য বউ এনে দিয়েছেন বলেই সমস্ত দায়িত্ব নিজের গা থেকে ঝেড়ে ফেলবেন না। অফিসে কাজের দোহাই দিয়ে ইলেক্ট্রিকের বিল বা ব্যাঙ্কের কাজ এড়িয়ে তা কখনই বউয়ের ওপর চাপিয়ে দেবেন না।

আপনার নিজের বা বা‌হি‌রের কোন কিছুই গোপন রাখ‌বেন না। আপনার সঙ্গীর সা‌থে তা অবশ্যই শেয়ার কর‌বেন।

যে কোনও খারাপ সময়ের জন্য নিজের জীবন সাথীকে কখনই দায়ী করবেন না। যদিও আপনি জানেন তিনিই দায়ী। সেই খারাপ সময় তাঁর পাশে দাঁড়ান। যখন সারা দুনিয়া আপনার সঙ্গীর বিপরী‌তে চলে যাবে তখনও তার হাতটাকে শক্ত করে ধরে থাকুন। দেখবেন কোনও দিনই সম্পর্কের সেতু নড়ব‌ড়ে হ‌বে না।

বিবাহিত জীবনে সব সময় সত্যি কথা বলবেন। কোন অবস্থা‌তেই মিথ্যার আশ্রয় নি‌বেন না।

নিজের পরম বন্ধুর গুনকীর্তন করা একদম ভুলে যান। বন্ধুকে কখনই নিজেদের ব্যাক্তিগত জীবনের মাঝখানে স্থান দেবেন না।

বিয়ের বহু বছর পরেও যাতে প্রেম আপনাদের কাছ থেকে দূরে সরে যেতে না পা‌রে, তার জন্য একে অপরকে সারপ্রাইজ দিন। দেখবেন এই সারপ্রাইজের মাধ্যমেই আপনাদের মধ্যেকার প্রেম বাস্তব জীব‌নে নতুনভা‌বে ফু‌টে উঠ‌বে।


রাব্বুল আলা‌মিন আমা‌দের সবার দাম্পত্য জীব‌নে সুখ দান করুন।
...আ‌মিন

No comments:

Post a Comment