অকাল বীর্যপাত; যৌন আচরণ, যৌন কর্মহীনতার একটি প্রকৃত উদাহরণ। অকাল বীর্যপাতের ফলে পুরুষের যৌন আচরণে এবং যৌন কর্মে প্রচন্ড রকমের অনীহা দেখা দেয়। যার কারণে দাম্পত্য জীবনে নেমে আসে বিষন্নতার ঘোর অমানিষা।
পাশ্চাত্যের যৌন বিশেষজ্ঞ জনসন অ্যান্ড জনসন, অকাল বীর্যপাত চিকিৎসার জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা প্রেসক্রিপশন ড্রাগ বিক্রি করা শুরু করেন। তিনি কয়েকমাস পর এটার ক্লিনিকাল ট্রায়াল প্রকাশ করেন। তাতে দেখা যায় যে, এমন লোক (গড়ে ৩০ জনের মধ্যে ২০ জন), যারা শুধুমাত্র যৌন মিলনকে একটি বা দুটি মিনিট স্থায়ী করার জন্য সর্বাত্বক চেষ্টা চালায়। এজন্য তারা জনসনের সেক্স ড্রাগ গ্রহন করে। তাদের মধ্যে যে যৌনভীতি ও চরম বিষন্নতা কাজ করে, তার থেকে কিছুটা পরিত্রাণের জন্যই ড্রাগ গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানা যায়।
তবে জনসন এও বলেন, অনেক লোক এমন রয়েছে যারা অকাল বীর্যপাতে ভোগা সত্তেও, তাদের যৌন মনোবল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক মাত্রায় আছে। যার কারণে তারা যেকোন ড্রাগ গ্রহন করে বা ড্রাগ গ্রহন না করেই ২\১ মিনিটেই পূর্ণ তৃপ্তি পেয়ে থাকে।
ডাক্তাররা এখনও সম্পূর্ণরূপে অকাল বীর্যপাতের কারণ সম্পর্কে সন্দিহান। কেউ কেউ বলে এটা প্রধানত মানসিক সমস্যার ফল হতে পারে।
কিছু লোক রয়েছে, যারা স্বল্প স্থায়ী যৌনসুখকে সঠিক হিসেবে ধরে রাখতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, অনেক ছেলেরা এবং সম্ভবত অধিকাংশ লোক-যারা অকাল বীর্যপাতেও স্বাভাবিক, তাদের যৌন মনোবল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক মাত্রায় আছে। তাই তাদের কাছে যৌন মিলনের স্থায়ীত্ব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। বেশিরভাগ লোক যৌনমিলনের সময় প্রায় ছয় মিনিট স্থায়ী হয়, কখনও কখনও পাঁচ মিনিটও হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সুস্থ্য রুচি সম্পন্ন মানষিকতা ও সঙ্গীর সাথে আদর্শ সম্পর্ক থাকলে যৌন স্থায়ীত্ব যদি ২\১ মিনিটও হয়, তবে সেটাতেই পরিপূর্ণ তৃপ্তি লাভ করা সম্ভব। সঙ্গীর হৃদয় ও মন জয়ের মধ্যেই প্রকৃত যৌনসুখ নিহিত। তাই যৌন মিলনে অকাল বীর্যপাত বা স্থায়ীত্ব; যৌন সুখের পূর্ণ তৃপ্তি পেতে বাধা নয়।
যৌনমিলনে যেমন় গুরুত্বপূর্ণ ভাবা হয় স্থায়ীত্ব বা দৈর্ঘ্যকে, কিন্তু তার চাইতেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সঙ্গী বা সহযোগীদের সন্তুষ্টি।
নয়া দিল্লির স্বাস্থ্যপরিসেবার একজন সাইকোলজিস্ট ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা: রাজীব; তিনি বিশ্বাস করেন, "একজন মানুষের বীর্যপাত এক মিনিট বা পাঁচ মিনিট স্থায়ী হতে পারে। তাঁর মতে, বিষয়টি সহজ হয়: "যদি আপনি যৌন মিলনে, সময় বা বীর্যপাত সম্পর্কে চিন্তা করে পুরো সময় ব্যয় না করেন। তাহলে অকাল বীর্যপাত সেভাবে সেক্সকে প্রভাবিত করে না।"
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, অকাল বীর্যপাত নীরবতাকে সঙ্গী করে শুধুমাত্র উদ্বেগ বাড়ায়। তাই যখন আপনি বিছানায় মিলনের জন্য উদ্যত, তখন যথেষ্ট মানষিক শক্তি, মানষিক প্রস্তুতি, নেতৃত্বদান ও আপনার কর্মক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে বিভিন্ন কলা-কৌশল উত্থাপন করুন। এই কাজগুলোর ব্যবহার মানসিক মাইনফিল্ড বিকাশ ঘটিয়ে, যৌনতার ভয়কে জয় করে।
যৌন জীবনে আপনাদের উভয়ের জন্য সম্পর্ক ভাল করতে উপায় খুঁজে বের করুন। কার্যত বেশিরভাগ নারীই চায় বেশিক্ষণ মিলন করতে, তবে তার চেয়ে বেশি চায় স্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে বেশি বেশি স্পর্শ বা অালতো মর্দন।
আমেরিকান একটি সমীক্ষার ফলাফল দ্বারা দেখানো হয়েছে, যৌন স্থায়ীত্বের প্রতি মানুষের বিভিন্ন প্রত্যাশা আছে। যেমন, আমেরিকার লোকেরা বলল তারা প্রায় ১৪ মিনিট স্থায়ী হবে, কিন্তু ব্রিটিশদের ১০ মিনিট সময় প্রচুর ছিল এবং জার্মান বলছে সাত মিনিট যথেষ্ট ছিল। আবার অশ্লীল একজন লোকের কল্পনানুসারে ৪৫ মিনিটের জন্য এটি হতে পারে, তবে তা বাস্তবসম্মত নয়।"
যৌন আচরণ আর্কাইভস প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানা যায়; দম্পতিরা পুরুষের অকাল বীর্যপাত সম্পর্কে মত দেন, তাদের ২৪ শতাংশ দাবি করেন অকাল বীর্যপাত তাদের কাছে সমস্যা মনে হয়, মাত্র ১০ শতাংশ তাদের সহযোগীদের অভিমতের সাথে একমত। বাকি ৬৬ শতাংশ অকাল বীর্যপাতে বিরক্ত হয় নি।
তাই নি:সন্দেহে বলা যায় যে, অকাল বীর্যপাত যৌন মিলনের জন্য কোন সমস্যা বা রোগ নয়। এটি হয় প্রকৃতি প্রদত্ব নতুবা মানষিক বিকারগ্রস্থ্যতা । তবে বদঅভ্যাসের কারণে যদি এটা হয়ে থাকে সেটা ভিন্ন কথা।
No comments:
Post a Comment